ঐক্যে বিরোধীতা কারীরা এখনো সক্রিয়

9
ঐক্যে বিরোধীতা কারীরা এখনো সক্রিয়

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে দীর্ঘদিন ধরে এমন দাবি ছিলো নারায়ণগঞ্জবাসীর। দুজনে একসাথে কাজ করলে নারায়ণগঞ্জকে একটি সুন্দর-সুপরিকল্পিত জেলা হিসাবে গড়ে তোলা সময়ের ব্যাপার এমন প্রত্যাশাও ছিলো সাধারণ জনগনের। সেই প্রত্যাশাকে সামনে রেখে আইভী-শামীম ও সেলিম ওসমানকে এক মঞ্চে বসায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব।

প্রভাবশালী এই তিন নেতা এক মঞ্চে বসার পর ধীরে ধীরে সমাধান হতে শুরু করেছে বেশ কয়েকটি সমস্যা। ইতিমধ্যেই নগরীর প্রধান সড়কগুলো থেকে হকারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফলে নারায়ণগঞ্জ ফিরে পাচ্ছে তার প্রাণ, ফিরে পাচ্ছে হারানো ঐতিহ্য। নগরবাসী এখন প্রাণখুলে হাটা চলা করতে পারে ফুটপাত দিয়ে। যদিও ঈদকে সামনে রেখে ফাক-ফোকড় দিয়ে হকাররা মূল সড়কগুলোতে বসার চেষ্টা করছে, কিন্তু এই তিনজনের অনড় অবস্থানের কারণে এবং প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপের কারণে সফল হচ্ছে না হকাররা।

একইসাথে, নগরীর দীর্ঘদিনের অন্যতম সমস্যা যানজটও এখন সহনীয় বলা চলে। আগে যেখানে চাষাড়া থেকে ২নং রেল গেইট কিংবা ২নং রেল গেইট থেকে চাষাড়ায় রিকশা যোগে যাতায়াত করতে সময় লাগতো ২০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট। এখন সেখানে ৫/১০ মিনিটের মধ্যেই যাতায়াত করা যায়। নারায়ণগঞ্জের এই তিন নেতার এক মঞ্চে বসা, ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তের কারণে এতোসব সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি সাধারণ জনগনের।

তারা বলছেন, গত জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট নারায়ণগঞ্জ গড়ার যে ঘোষনা দিয়েছেন তা গড়তে হলে স্থানীয় এই তিন নেতার ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। এই তিনজনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নেতা হিসেবে মানেন এবং তার নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখেন। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর সম্পর্ক আরো মজবুত হতে হবে বলে দাবি তাদের। অন্যদিকে, সেলিম ওসমান বরাবরের মতো দুজনের মুরব্বী হয়ে দুজনকে আগলে রাখলে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নারায়ণগঞ্জ, আবারও তার হারানো ইতিহাস-ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করতে পারবে বলে বিশ^াস নারায়ণগঞ্জবাসীর।

তবে, ওসমান পরিবার ও চুনকার পরিবারের মাঝে মিল যেন না হয় সেদিকেও তৎপর একশ্রেণীর ধান্ধাবাজ প্রকৃতির লোক। শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, একেএম শামীম ওসমান ও ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভীর মধ্যবর্তী বৈরিতা কাটিয়ে বর্তমানে যে সুশীতল সম্পর্ক বিরাজমান তা বেশীদিন ধরে রাখা মুশকিল, কেননা একটি মহল তাদের মাঝে সর্বদা দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখতে চায়। এই দ্বন্দের কারণে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসা ঐ ধান্দাবাজ লোকগুলো আবারও তাদের মাঝে ফাটল ধরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে।

নগরবাসী বলছে, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের প্রতি আস্থা রেখে আইভী-শামীম দ্বন্দ্বের যে বরফ দিন দিন গলছে, তা বেশীদিন চলমান রাখতে চায় না ঐক্যের বিরোধীতাকারী চক্রটি। এই চক্রটিই উভয়পক্ষকে নানাভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কু-পরামর্শ দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়। কেননা, শামীম-আইভীর দ্বন্দ যদি পুরোপুরি নিরসন হয় বা দুজন যদি নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে জেলার অনেক রথী-মহারথী বেকায়দায় পড়বেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেক প্রবীণ নেতাও। নগরবাসীর মতে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের বড় বড় পদ-পদবী ধারণ করে থাকা ও উভয় পরিবারের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা ভোগকারী নেতারা শামীম-আইভী দ্বন্দের অবসান চান না।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, শামীম-আইভীর দ্বন্দ নিরসনে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব যে উদ্যোগ নিয়েছে তা নি:সন্দেহে উজ্জল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ ঐক্য যদি দীর্ঘস্থায়ী কিংবা চিরস্থায়ী হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে তা হবে একটি উজ্জল মাইলফলক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাংসদ শামীম ওসমান ও নাসিক মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী যদি জেলার উন্নয়ণে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজনীতি করেন, তবে নারায়ণগঞ্জের সব সমস্যা সমাধান করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তারা এক সাথে জনতার কল্যানে কাজ করলে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের গতি আরো বেশী তরান্বিত হবার পাশাপাশি নতুন এক নারায়নগঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল।