প্রশংসায় ভাসছে গিয়াস-খোকন ॥ চ্যালেঞ্জ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

45
প্রশংসায় ভাসছে গিয়াস-খোকন ॥ চ্যালেঞ্জ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

সাংগঠনিক শক্তির বিচারে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি এমনটাই দাবি দলটির নেতাকর্মীদের। বিশেষত, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের মতো একজন দক্ষ, বর্ষিয়ান-যোগ্য এবং গোলাম ফারুক খোকনের মতো তরুণ ও জনপ্রিয় নেতাদ্বয়ের নেতৃত্বে ও অন্যান্য পরীক্ষিত নেতাদের কাধে জেলার দায়িত্ব তুলে দেয়ার পর থেকে অনেকটাই ঘুরে দাড়িয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে অবশ্য খুব বেশী সময় লাগেনি নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দদের। নবগঠিত এ কমিটি ঘোষণার পর ঢাকায় মহাসমাবেশসহ ৪/৫টি দলীয় কর্মসূচী পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। প্রতিটি কর্মসূচীতেই রেকর্ডসংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগনের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সর্বশেষ বিজয় দিবসে ২০ হাজারেরও অধিক নেতাকর্মীদের নিয়ে বিজয় র‌্যালি করে জেলা বিএনপি। যা রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদেরও দৃষ্টি কেড়েছে বলে জানা গেছে।

আর তাই বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রশংসায় ভাসছে গিয়াস-খোকন সহ জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়কবৃন্দরা। যদিও প্রথম যুগ্ম আহবায়ককে এখনো পর্যন্ত তাদের সাথে দেখা যায়নি। আরেক যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি প্রথম কর্মসূচীতে একসাথে থাকলেও পরবর্তীতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকায় তিনিও যোগ দিতে পারছেননা।

তবে, প্রশংসায় ভাসলেও তাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষমান বলে দাবি নেতাকর্মীদের। তাদের মতে, সরকারের অনিয়ম-দুর্ণীতির বিরুদ্ধে দলীয় কর্মসূচী পালনের লক্ষ্যে জেলা বিএনপির এ আহবায়ক কমিটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপ দিতে হবে গিয়াস-খোকনকে। এ লক্ষ্যে স্বচ্ছ ও শক্তিশালি একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা বর্তমানে তাদের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে দলটির নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে গত ১৫ই নভেম্বর। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ঐ কমিটিতে আরও ৭জনকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে।

কমিটির অপর সাত জন যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম টিটু, জেলা বিএনপি বিগত আহবায়ক কমিটির সদস্য মাসুকুল ইসলাম রাজীব, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান খোকা, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোশারফ হোসেন ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জুয়েল আহমেদ।

বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মতে, ১৪ বছর যাবৎ দল ক্ষমতায় নেই তারপরও সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে দলের অনেক নবীন-প্রবীণ নেতা-কর্মী ও সমর্থক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অনেকেই হামলা-মামলার কারণে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। সব জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ত্যাগী ও পরীক্ষিতরা ঠিকই আন্দোলন করেছেন, রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমানে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির কাছে সকলের প্রত্যাশা থাকবে, দলের মধ্যে থাকা পরীক্ষিত, ত্যাগী, নবীন-প্রবীণ নেতাদের নিয়ে শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করা। হবে। যে কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কর্মকান্ডকে আরও গতিশীল করবে এবং যে কোনো আন্দোলনে রাজপথে থাকবে।

বর্তমান সময়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের এসব নেতাকর্মীরা বলেন, বর্তমানে রাজনীতি করাটা বেশ কঠিন হয়ে গেছে। একদিকে ক্ষমতাসীনদের নানা ভয়ভীতি অন্যদিকে প্রশাসনের বাধার মুখে থাকতে হচ্ছে। যারা বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না তাদের কমিটিতে স্থান দেওয়ার আহবানও জানান তারা।